“সুপ্রিমকোর্টের সামনে গ্রীক র্মূতি স্থাপন দেশের সংবিধান ও সংস্কৃতির সাথে সাংঘর্ষিক”: ওলামা লীগ

Image result for কোর্ট“সুপ্রিমকোর্টের সামনে গ্রীক র্মূতি স্থাপন দেশের সংবিধান ও সংস্কৃতির সাথে সাংঘর্ষিক”: ওলামা লীগ

সুপ্রীম কোর্ট প্রাঙ্গনে গ্রীক দেবী মূর্তি স্থাপনের তীব্র প্রতিবাদ করে শীর্ষস্থানীয় ইসলামী নেতৃবৃন্দ বলেছেন, সুপ্রিম কোর্টের সামনে গ্রীক মূর্তি স্থাপন বাংলাদেশের কোন ধর্মের সংস্কৃতি নয় এমনকি বাঙ্গালী সংস্কৃতিও নয় বরং এটা গ্রীকদের সংস্কৃতি ইউরোপীয় সংস্কৃতি। সুপ্রিমকোর্টের সামনে গ্রীক মূর্তি স্থাপন এদেশের সংবিধানের সাথে সাংঘর্ষিক এমনকি রাষ্ট্রধর্ম ইসলামের সাথেও সাংঘর্ষিক। এটা সংবিধানের ২ (ক), ১২ এবং ২৩ অনুচ্ছেদের সম্পূর্ণ বিরোধী। ১৯৪৮ সালে সুপ্রিম কোর্ট প্রতিষ্ঠার পর থেকে যখন কোন মূর্তি ছিল না। তখন কি সুপ্রিম কোর্টে ন্যায় বিচার হয়নি? বাংলাদেশের কোন সমাজেই গ্রীক দেবীর মূর্তি স্থাপন সামঞ্জস্যপূর্ণ নয়। এটা সরকারের বিরুদ্ধে গভীর ষড়যন্ত্র। সরকারের বিরোধী আন্দোলনের সুযোগ করে দিতেই এ ষড়যন্ত্র।অবিলম্বে এটা অপসারণ করতে হবে।
এদিকে দেশের আলেম-ওলামা কর্তৃক সুপ্রিম কোর্টের সামনে মূর্তি স্থাপনের প্রতিবাদ করায় এর বিরোধীতা করে নাস্তিক্যবাদী চেতনার ধারকবাহক ও ইসলাম বিদ্বেষী বাম ও হিন্দু নেতাদের সাম্প্রতিক বক্তব্যের তীব্র নিন্দা জানিয়েছেন দেশের শীর্ষস্থানীয় আলেম ওলামা ও বাংলাদেশ ওলামা লীগ নেতৃবৃন্দ। তারা বলেছেন, যারা সকলেই ইসলাম বিদ্বেষী এবং ইসলাম ধর্ম সম্পর্কে অজ্ঞ ও কুখ্যাত। সবসময় ইসলামের বিপক্ষে যাদের অবস্থান। রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম, পাঠ্যপুস্তক থেকে হিন্দুত্ববাদী লেখা বাদ দেওয়া, এবং অপসংস্কৃতির ধারক ভারতসহ সকল বিদেশী চ্যানেল নিষিদ্ধ করার বিপক্ষে যাদের অবস্থান তারাই মূর্তির পক্ষে বলতে পারে।
বিবৃতিদাতারা হলেন, মাওলানা, মুফতি আব্দুর রহিম (পীর সাহেব) শেরপুর, বাংলাদেশ আওয়ামী ওলামা লীগের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা আলহাজ্জ মাওলানা মুহম্মদ আখতার হুসাইন বুখারী, সাধারণ সম্পাদক- আলহাজ্জ কাজী মাওলানা মুহম্মদ আবুল হাসান শেখ শরীয়তপুরী, সম্মিলিত গবেষণা পরিষদের চেয়ারম্যান আলহাজ্জ হাফেজ মাওলানা মুহম্মদ আব্দুস সাত্তার, মিরপুর নূর-এ মদীনা চিশতীয়া দরবারের পীর সাহেব মাওলানা মুজিবুর রহমান চিশতি, আজিমপুর ছোট দায়রা শরীফ শাহী মসজিদের খতীব আলহাজ্ব মাওলানা মুহম্মদ আলমগীর হুসাইন, জাতীয় কুরআন শিক্ষা মিশনের সভাপতি লায়ন মাওলানা আবু বকর সিদ্দীক, পীরজাদা মাওলানা সিরাজুল ইসলাম (হবিগঞ্জ), মাওলানা মুহম্মদ শওকত আলী টাঙ্গাইল, মাওলানা তাজুল ইসলাম (বড়নগরী) বাক্ষণবাড়ীয়া, সাপ্তাহিক ওলামা কণ্ঠের সম্পাদক আখতার হুসাইন বিন ফারুকী, বাংলাদেশ এতিমখানা কল্যান সমিতির সভাপতি হাফেজ মাওলানা মোস্তফা চৌধুরী বাগেরহাটি হুযূর, হাফেজ মাওলানা মুহাম্মদ আব্দুল জলিল নারায়নগঞ্জী, মাওলানা মুহাম্মদ আব্দুল কাদের শরীয়তপুরী, আলহাজ্জ মাওলানা মাহবুবুর রহমান রংপুরী প্রমুখ।
বিবৃতিতে তারা বলেন, যারা সুপ্রীম কোর্টে মূর্তি স্থাপনের পক্ষে সাফাই গেয়েছে তাদের অন্যতম হলো সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী, অজয় রায়, পার্বত্য চট্টগ্রামে বিচ্ছিন্নতাবাদীদের পক্ষাবলম্বনকারী সুলতানা কামাল, আব্দুল গাফফার চৌধুরী, বদরুদ্দীন উমর, বিচারপতি গোলাম রব্বানী, বোরহান উদ্দিন খান জাহাঙ্গীর, কামাল লোহানী প্রমুখ।
বিবৃতিতে তারা বলেন অধ্যাপক সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী বিবৃতিতে বলেছেন, মূর্তি অপসারণের দাবী নাকি আপোসযোগ্য নয় এবং মুক্তিযুদ্ধের চেতনার পরিপন্থি। এই বক্তব্য দিয়ে পবিত্র কোরআনের নির্দেশ এবং মুক্তিযুদ্ধ ও স্বাধীনতার ঘোষণাপত্রের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছে এই লোক। রাষ্ট্রধর্ম ইসলামের বিরুদ্ধে রীটকারী ১৪জন চিহ্নিত ইসলাম বিদ্বেষীর একজন এই অধ্যাপক সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী। বর্তমান ক্ষমতাসীন সরকার এর কুরআন ও সুন্নাহ বিরোধী কোন কাজ হবে না এই নির্বাচনী ওয়াদাকেও অবমাননাকারী। কারণ পবিত্র কোরআন শরীফে মূর্তি অপসারণের কথা বলা হয়েছে। রাসূল ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি স্বয়ং মূর্তি ধ্বংসের কথা বলেছেন। আর স্বাধীনতার ঘোষণাপত্রে বঙ্গবন্ধু বলেছেন, ইসলামের সাম্য মানবিক মর্যাদা ও সামাজিক ন্যায় বিচার প্রতিষ্ঠার জন্য বাংলাদেশের স্বাধীনতা ঘোষণা করছি। বঙ্গবন্ধু ইনশাআল্লাহ বলেই স্বাধীনতা ঘোষণা দিয়েছিলেন। তাছাড়া ৭০ সালের নির্বাচনী ওয়াদা ছিল “কোরআন সুন্নাহ বিরোধী কোন আইন পাশ হবেনা।।” মুক্তিযুদ্ধের ঘোষণাপত্রের কোথাও মূর্তি প্রতিষ্ঠার কথা বলা হয়নি। মুক্তিযুদ্ধের ঘোষণাপত্রে বঙ্গবন্ধু বলেছেন, সর্বশক্তিমান আল্লাহর নামে আমি আপনাদের আদেশ দিচ্ছি শত্রুর বিরুদ্ধে সশস্ত্র যুদ্ধ চালিয়ে যান বিজয় না হওয়া পর‌্যন্ত। সুতরাং মুক্তিযুদ্ধের চেতনা হলো ইনশাআল্লাহ’র চেতনা। মুক্তিযুদ্ধের এই ঘোষণাতে বঙ্গবন্ধু মুর্তির স্বপক্ষে কোন কথা বলেননি বরং আল্লাহ তায়ালার উপর ভরসা করেছেন। বঙ্গবন্ধু মূর্তির পক্ষে ছিলেন না বলেই প্রথম রাষ্ট্রপতি হওয়া স্বত্তেও সুপ্রিম কোর্টের সামনে কোন মূর্তি স্থাপন করেন নি। সুতরাং মূর্তি অপসারণের দাবী স্বাধীনতার ঘোষণার বিরোধী নয় বরং পক্ষে। অতএব সিরাজুল ইসলাম চৌধুরীর মূর্তির স্বপক্ষে যে বক্তব্য দিয়েছেন তা অবান্তর।
বিবৃতিতে তারা বলেন শাহবাগী আন্দোলনের গডফাদার ইমরান এইচ সরকার বলেছেন, যে মুর্তি অপসারণের দাবীতে হেফাজতের বক্তব্য দেওয়ার ক্ষেত্রে নাকি সরকার প্রশ্রয় দিয়েছে। অথচ এটা হেফাজতের কথা নয় বরং মূর্তি অপসারণ কোরআন সুন্নাহ কথা এবং এই দেশের সব মুসলমানদের মনের কথা । সুতরাং বাঁচাল ইমরান সরকারের কথা এই দেশের ইসলামী জনতার নিকট হাস্যরসের খোরাক।
তাছাড়া পার্বত্য চট্টগ্রামে বিচ্ছিন্নতাবাদীদের পক্ষাবলম্বনকারী এবং হিন্দু স্বামীওয়ালা সুলতানা কামাল মূর্তির পক্ষে বলবে এটাই স্বাভাবিক। কারণ যার কাছে পাবর্ত্য বাঙ্গালীদের কোন মূল্য নাই, দেশের কোন মূল্য না; তার কাছে কাছে ইসলাম ধর্মেরও কোন মূল্যায়ন আশা করা যায় না।
বিবৃতিতে তারা বলেন, ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটি, মূর্তিকে ন্যায় বিচারের প্রতীক হিসেবে বলে দাবী করেছে, এবং এর বিরুদ্ধাচারী মুসলমানদেরকে মৌলবাদী বলেছে। এ বিষয়ে ঘাদানিক নেতৃবৃন্দের জানা থাকা দরকার, মূর্তি ন্যায় বিচারের প্রতীক গ্রীকদের ধর্মে হতে পারে বা অন্য কোন ধর্মে হতে পারে কিন্তু মুসলমানদের ধর্মে নয়। এদেশ শতকরা ৯৫ ভাগ মুসলমানের দেশ এবং ধর্ম ইসলাম। মুসলমানদের কিতাব পবিত্র কোরআনের নির্দেশ হচ্ছে মূর্তি ধ্বংস করা। মুসলমানদের শেষ নবী রাসুল ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন যে তিনি মূর্তি ধ্বংস করতে প্রেরিত হয়েছেন। সেখানে ৯৫ ভাগ মুসলমানদের উপর অন্য ধর্ম চাপিয়ে দেয়ার চেষ্ঠা করা চরম দৃষ্টতা। ঘাদানিকরা তো নিজ বাড়ীতেই এখনো মূর্তি স্থাপন করেননি। তাহলে সর্বোচ্চ বিচারালয়ে মূর্তি স্থাপনের খাহেশ কাদের স্বার্থে?
ভারতের সুপ্রিম কোর্টের সামনেও ন্যায় বিচারের প্রতীক রুপে গ্রীক দেবীর মূর্তি নাই । তাছাড়া আখেরী রাসুল ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার নাম, ন্যায় বিচারের প্রতীক হিসেবে আমেরিকার সুপ্রিম কোর্টের সামনে লিপিবদ্ধ আছে। বাংলাদেশেও তাই করতে হবে কোন গ্রীক মূর্তি নয়। সুতরাং ঘাদানিক এর ন্যায় বিচারের প্রতীকের দাবি অবান্তর এবং উদ্দেশ্য প্রণোদিত। এছাড়া মূর্তির পক্ষাবলম্বনকারী অন্যতম রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম এবং মাদ্রাসা শিক্ষার ঘোর বিরোধী অজয় রায় নিজে যেহেতু মূর্তি পূজারী সেহেতু তার থেকে মূর্তি বিপক্ষে কিছু আশা করা যায় না।
বিবৃতিতে তারা বলেন, মূর্তি স্থাপনের পক্ষে যেকোন বিবৃতি এদেশের মুসলমানদের কাছে গ্রহণযোগ্য নয়। কারণ ভারতে হিন্দুরা সংখ্যাগরিষ্ট হওয়ায় যদি গরু কুরবানী করা না যায়, তাহলে ৯৫ ভাগ মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ট মুসলমানের বাংলাদেশে সুপ্রিমকোর্টসহ দেশের কোথাও কোন মূর্তি স্থাপন ও সংরক্ষণ করতে দেয়া যাবেনা। অবিলম্বে সব মূর্তি অপসারণ করতে হবে। 

Post a Comment

[facebook][blogger]

MKRdezign

Contact Form

Name

Email *

Message *

Powered by Blogger.
Javascript DisablePlease Enable Javascript To See All Widget