মহাসম্মানিত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদের মুবারক শানে কটূক্তি করার দায়ে কথিত চর্মনাই পীরকে আইনী নোটিশ
নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত হযরত আহলু বাইত শরীফ ও হযরত ছাহাবায়ে কিরামগণ উনাদের শান মুবারকের খেলাফ মানহানিকর বক্তব্য দেয়ায় ‘ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ’ এর আমির মুফতে ফয়জুল করিম কথিত চর্মনাই পীরকে আইনী নোটিশ পাঠানো হয়েছে।
গতকাল ইয়াওমুল খামীস (বৃহস্পতিবার, ২৪ জুন) দৈনিক আল ইহসান ও মাসিক আল বাইয়্যিনাতের সম্পাদক আল্লামা মুহম্মদ মাহবুব আলমের পক্ষ থেকে এই আইনী নোটিশ পাঠানো হয়।
নোটিশে বলা হয়, উক্ত ব্যক্তি তার এক আলোচনায় বলেছে, ‘ছাহাবীরা মুরতাদ হয়ে গেছে’। নাউযুবিল্লাহ মিন যালিক!
অথচ সর্বস্বীকৃত যে, ‘ছাহাবী’ তিনি যিনি ঈমানের সাথে সাইয়্যিদুল মুরছালীন ইমামুল মুরছালীন নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে দেখেছেন, উনার ছোহবত মুবারক এখতিয়ার করেছেন এবং ঈমানের সাথে ইন্তেকাল করেছেন। সুবহানাল্লাহ!
এটাই যেহেতু ছাহাবীর সংজ্ঞা তাহলে ছাহাবীদের শান মুবারকে কি করে মুরতাদ হওয়ার অভিযোগ আসে? অর্থাৎ আপনি হযরত ছাহাবাই কিরামগণের মানহানীর উদ্দেশ্যে উক্ত বক্তব্য প্রকাশ করেছেন যা আমার সম্মানিত মোয়াক্কেলসহ সকল মুসলমানের দ্বীনী অনুভূতিতে আঘাতের শামিল।
উক্ত আলোচনায় সে হুযুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার দুই সম্মানিত কন্যা উনাদের সম্পর্কে মিথ্যা ও মনগড়া বক্তব্য দিয়েছে, তার বক্তব্য সমূহ খন্ডন করে সঠিক ইতিহাস তুলে ধরা হয় নোটিশে।
নোটিশে বলা হয়, প্রকৃত বিশুদ্ধ ইতিহাস হচ্ছে, সাইয়্যিদুল মুরছালীন ইমামুল মুরছালীন নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি আনুষ্ঠানিক নুবুওওয়াত মুবারক প্রকাশের পূর্বেই উনার সম্মানিতা উক্ত দুই বানাত (মেয়ে) আলাইহিমাস সালাম উনাদেরকে বাল্য অবস্থায় যথাক্রমে উতবা এবং উতাইবার সাথে বিবাহের আক্দ্ (চুক্তি) সম্পাদন করা হয়েছিল। তখন দ্বিতীয় বানাত আলাইহাস সালাম উনার বয়স মুবারক ৭ বছরের কাছাকাছি এবং তৃতীয় বানাত আলাইহাস সালাম উনার বয়স মুবারক ৫ বছরের কাছাকাছি। অতঃপর পবিত্র সূরা মাছাদ (লাহাব) শরীফ নাযিল হলে বাল্য অবস্থাতেই সেই চুক্তি বাতিল বা ছিন্ন করা হয়। ফলে উনাদেরকে আবূ লাহাবের ছেলেদের ঘরে যেতে হয়নি। অতঃপর কিছুদিন অতিবাহিত হওয়ার পর প্রথমে দ্বিতীয় বানাত আলাইহাস সালাম উনাকে এবং উনার বিদায়ের পর তৃতীয় বানাত আলাইহাস সালাম উনাকে আমীরুল মু’মিনীন খলীফাতুল মুসলিমীন হযরত যুন নূরাইন আলাইহিস সালাম উনার সাথে নিছবাতুল আযীম (বিবাহ) মুবারক সম্পাদন করা হয়। আর এ কারণেই তিনি যূন নূরাইন (দুই নূর মুবারকের অধিকারী) লক্ববে ভূষিত হন। সুবহানাল্লাহ!
নোটিশে আরও বলা হয়, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার প্রথম বানাত আলাইহাস সালাম উনার নাম মুবারক হযরত যাইনাব আলাইহাস সালাম। আরবের তৎকালীন নিয়ম অনুসারে উনাকেও অল্প বয়সে নিছবাতুল আযীম মুবারক সম্পাদন করা হয়েছিল উনারই আপন খালাতো ভাই হযরত আবুল আছ আলাইহিস সালাম উনার সাথে। অর্থাৎ যিনি হচ্ছেন হযরত উম্মুল মু’মিনীন আল ঊলা কুবরা আলাইহাস সালাম উনার আপন বোনের ছেলে। এবং এ নিছবাতুল আযীম মুবারকও সংঘটিত হয়েছিলো আনুষ্ঠানিক
নুবুওওয়াত মুবারক প্রকাশের পূর্বেই। আনুষ্ঠানিক নুবুওওয়াত মুবারক প্রকাশের পর সমস্ত লোক একসাথে ঈমান গ্রহণ করে ছাহাবী হননি। বরং কেউ শুরুর দিকে হয়েছেন, কেউ মাঝামাঝি সময়ে হয়েছেন, কেউ শেষে হয়েছেন। অনেকে হিজরতের আগে হয়েছেন, অনেকে হিজরতের পরে হয়েছেন। অনেকে বদর জিহাদের পরে হয়েছেন, অনেকে অন্য জিহাদের পরে হয়েছেন, অনেকে মক্কা শরীফ বিজয়ের সময় হয়েছেন, অনেকে পরেও হয়েছেন। অনেকে বিদায় হজের সময়ে হয়েছেন, অনেকে আবার তার পরেও হয়েছেন। আর সম্মানিত দ্বীন ইসলাম গ্রহণের বিষয়টি জোর-জবরদস্তিমূলক ছিলো না। বরং প্রত্যেকের এখতিয়ারাধীন ছিল। যার কারণে হযরত আবুল আছ আলাইহিস সালাম তিনি বদর জিহাদের পূর্বে সম্মানিত দ্বীন ইসলাম গ্রহণের বিষয়টি প্রত্যক্ষভাবে প্রকাশ না করলেও পরবর্তীকালে তা প্রকাশ করেন। আর বদর জিহাদে তিনি স্বেচ্ছায় যাননি বরং কাফির কুরাইশ নেতারা উনাকে বাধ্য করেছে। আর তিনি নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার বিরোধিতকারীও ছিলেন না। তাই উনাকে বদর জিহাদে বন্দিদের মধ্যে গণ্য করা হয়েছিল যেমন বন্দিদের মধ্যে গণ্য করা হয়েছিল নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সম্মানিত চাচা হযরত আব্বাস আলাইহিস সালাম উনাকে। সুবহানাল্লাহ! আর মুক্তিপণের শর্তে বন্দিদের ছেড়ে দেয়ার বিষয়টি সাইয়্যিদুল মুরছালীন ইমামুল মুরছালীন নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনারই মুবারক নির্দেশ। তাই হযরত আবুল আছ আলাইহিস সালাম উনার মুক্তিপণ হিসেবে যে হার মুবারক নিয়ে আসা হয়েছিল এটা কষ্টের কারণ ছিল না। তাছাড়া উক্ত হার মুবারক মুক্তিপণ হিসেবে গ্রহণও করা হয়নি। বরং উনাকে বিনা মুক্তিপণে মুক্তি দেয়া হয়েছে। সুবহানাল্লাহ! অতঃপর হিজরী ষষ্ঠ সনে হুদাইবিয়ার সন্ধির পাঁচ মাস পূর্বে তিনি প্রকাশ্যে সম্মানিত দ্বীন ইসলাম গ্রহণ করার বিষয়টি মক্কা শরীফ অধিবাসীদের নিকট প্রকাশ করেন এবং পবিত্র মদীনা শরীফে হিজরত মুবারক করেন। সুবহানাল্লাহ!
কথিত চর্মনাই পীরের কটূক্তিকর ও মানহানিকর বক্তব সম্পর্কে বাংলাদেশের আইন সম্পর্কে বলা হয়, যেহেতু সাংবিধানিকভাবে যেহেতু বাংলাদেশের রাষ্ট্রদ্বীন ইসলাম, সুতরাং ইসলামী আক্বীদাসমূহ রাষ্ট্র দ্বারা সুরক্ষিত। অথচ তার উল্লেখিত বক্তব্যসমূহ বিভ্রান্তিমূলক, মনগড়া এবং সহি আক্বীদার পরিপন্থি যাহা দ্বীনি অনুভুতিতে চরমভাবে আঘাত প্রদান করে। এই ধরনের ভুল, অতিরঞ্জিত ও অসমর্থিত বক্তব্য গণমাধ্যমে প্রকাশ করাটা একটি দ-নীয় অপরাধ।
নোটিশ পাওয়ার তিনদিনের মধ্যে সুস্পষ্ট বিবৃতি দিয়ে বক্তব্যসমূহ প্রত্যাহার করে তাকে ক্ষমাপ্রার্থনা করার আহ্বান জানানো হয়েছে। অন্যথায় তার বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
লিংক- http://www.al-ihsan.net/view-post/%E0%A6%A6%E0%A7%87%E0%A6%B6%E0%A7%87%E0%A6%B0-%E0%A6%96%E0%A6%AC%E0%A6%B0/5/%E0%A6%AE%E0%A6%B9%E0%A6%BE%E0%A6%B8%E0%A6%AE%E0%A7%8D%E0%A6%AE%E0%A6%BE%E0%A6%A8%E0%A6%BF%E0%A6%A4-%E0%A6%86%E0%A6%B9%E0%A6%B2%E0%A7%81-%E0%A6%AC%E0%A6%BE%E0%A6%87%E0%A6%A4-%E0%A6%B6%E0%A6%B0%E0%A7%80%E0%A6%AB-%E0%A6%86%E0%A6%B2%E0%A6%BE%E0%A6%87%E0%A6%B9%E0%A6%BF%E0%A6%AE%E0%A7%81%E0%A6%B8-%E0%A6%B8%E0%A6%BE%E0%A6%B2%E0%A6%BE%E0%A6%AE-%E0%A6%89%E0%A6%A8%E0%A6%BE%E0%A6%A6%E0%A7%87%E0%A6%B0-%E0%A6%AE%E0%A7%81%E0%A6%AC%E0%A6%BE%E0%A6%B0%E0%A6%95-%E0%A6%B6%E0%A6%BE%E0%A6%A8%E0%A7%87-%E0%A6%95%E0%A6%9F%E0%A7%82%E0%A6%95%E0%A7%8D%E0%A6%A4%E0%A6%BF-%E0%A6%95%E0%A6%B0%E0%A6%BE%E0%A6%B0-%E0%A6%A6%E0%A6%BE%E0%A7%9F%E0%A7%87-%E0%A6%95%E0%A6%A5%E0%A6%BF%E0%A6%A4-%E0%A6%9A%E0%A6%B0%E0%A7%8D%E0%A6%AE%E0%A6%A8%E0%A6%BE%E0%A6%87-%E0%A6%AA%E0%A7%80%E0%A6%B0%E0%A6%95%E0%A7%87-%E0%A6%86%E0%A6%87%E0%A6%A8%E0%A7%80-%E0%A6%A8%E0%A7%8B%E0%A6%9F%E0%A6%BF%E0%A6%B6/147307

Post a Comment