ইসলামকে অবমাননার দায়ে বাংলাদেশ ইসলামী ঐক্যজোটের মহাসচিব মাওলানা মনিরুজ্জামান রাব্বানীকে লিগ্যাল নোটিশ

ইসলামকে অবমাননার দায়ে বাংলাদেশ ইসলামী ঐক্যজোটের মহাসচিব মাওলানা মনিরুজ্জামান রাব্বানীকে লিগ্যাল নোটিশ
মাওলানা মনিরুজ্জামান রাব্বানীকে লিগ্যাল নোটিশ

ইসলামকে অবমাননার দায়ে বাংলাদেশ ইসলামী ঐক্যজোটের মহাসচিব মাওলানা মনিরুজ্জামান রাব্বানীকে লিগ্যাল নোটিশ

নিজস্ব প্রতিবেদক: মসজিদ ও টুপি নিয়ে অবমাননাকর মন্তব্যের মাধ্যমে দ্বীনি অনুভূতিতে আঘাতের দায়ে বাংলাদেশ ইসলামী ঐক্যজোটের মহাসচিব মাওলানা মনিরুজ্জামান রাব্বানীকে লিগ্যাল নোটিশ পাঠানো হয়েছে। দৈনিক আল ইহসান ও মাসিক আল বাইয়্যিনাত পত্রিকার সম্পাদক মুহম্মদ মাহবুব আলমের পক্ষে বৃহস্পতিবার (২৬ মার্চ) বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী এডভোকেট মাসউদুজ্জামান ডাকযোগে লিগ্যাল নোটিশটি পাঠান।
লিগ্যাল নোটিশে বলা হয়, গত ২৩ মার্চ ডিবিসি নিউজ চ্যানেলের টক শো “রাজকাহন”-এর একটি পর্বে মাওলানা মনিরুজ্জামান রাব্বানী মসজিদে নামাজ আদায়, হুজুর পাক রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের টুপি পরিধান ও ইসলামে গণজমায়েতের বিধান নিয়ে মনগড়া ও আপত্তিকর মন্তব্য প্রদান করেন। সেই টক শোতে মাওলানা মনিরুজ্জামান বলেছিলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের অন্যতম মুজিজা হলো যে, উনার উম্মতের জন্য সমস্ত জমিনই মসজিদ। ঘরও মসজিদ, বিছানাও মসজিদ।
নোটিশে বলা হয়, মাওলানা মনিরুজ্জামান এই বক্তব্যের মাধ্যমে পবিত্র হাদীস শরীফের অপব্যাখ্যা করেছেন। পবিত্র হাদীস শরীফের প্রকৃত অর্থ হলো, সমস্ত জমিনই নামাজ পড়ার মতো পবিত্র ও পরিচ্ছন্ন – যদি না অপবিত্রতা ও অপরিচ্ছন্নতার কোনো প্রমাণ পাওয়া যায়। এই হাদীস শরীফ দ্বারা ঘরে নামাজ পড়াকে মসজিদে নামাজ পড়ার সমতুল্য বোঝানো হয়নি। বরং মসজিদে গিয়ে জামায়াতে নামাজ আদায় করাও মুসলিমদের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
পবিত্র কুরআন শরীফ ও হাদীস শরীফ থেকে বিভিন্ন উদ্ধৃতি দিয়ে নোটিশে বলা হয়, মহানবী হুজুর পাক সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম অন্ধ ব্যক্তিকেও জামায়াত পরিত্যাগ করার অনুমতি দেননি। আরেক হাদীসে এসেছে, মহানবী হুজুর পাক সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম জামায়াত পরিত্যাগকারীদের বাড়ি জ্বালিয়ে দেয়ার মতো ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন।
সেই টক শোতে মাওলানা মনিরুজ্জামান আরো বলেছিলেন, “রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম টুপিটা এজন্য পরেছেন যে, বছরে কোনো এক সময়ে একটা বাতাস আসতে পারে, যে বাতাসটা মানুষের মেধার জন্য অনেক সময় খুব ক্ষতিকর হয়ে যায়, বা অসুস্থতার একটা কারণ হয়। এজন্য রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম টুপি পরতেন।”
মনিরুজ্জামানের এই বক্তব্যের তীব্র নিন্দা জানিয়ে নোটিশে বলা হয়, তাঁর এই বক্তব্য সম্পূর্ণই মনগড়া ও বিকৃত। টুপি পরার পবিত্র সুন্নত সন্বন্ধে ইসলামী কিতাবসমূহে এমন কোনো বর্ণনা নেই। এই মন্তব্যের দ্বারা পবিত্র সুন্নতকে চরমভাবে অবমাননা করা হয়েছে।
মনিরুজ্জামান সেদিনের টক শোতে আরো বলেছিলেন, গণজমায়েতের কোনো বিধান ইসলামে নেই।
নোটিশে বলা হয়, এই মন্তব্যের দ্বারা পবিত্র দ্বীন ইসলামের জামায়াত, জুমআর নামাজ, জানাজার নামাজ, পাঠচক্র, বয়ান ইত্যাদি সম্বন্ধে মনিরুজ্জামানের চরম অজ্ঞতা প্রকাশ পেয়েছে।
নোটিশদাতা বলেন, উদ্দেশ্যমূলকভাবে কোনো সম্প্রদায়ের ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত করাটা বাংলাদশে প্রচলিত দণ্ডবিধির ২৯৫(ক) ধারায় শাস্তিযোগ্য অপরাধ। ডিজিটাল মাধ্যমে এমন ধর্মীয় অবমাননামূলক তথ্য সম্প্রচার করাটা ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন, ২০১৮-এর ২৮ ধারার অধীনে অপরাধ। মাওলানা মনিরুজ্জামান মসজিদ, টুপি ও গণজমায়েত নিয়ে বিকৃত ও অজ্ঞতাপ্রসূত মন্তব্য করে নোটিশদাতার দ্বীনি অনুভূতিতে আঘাত দিয়েছেন।
নোটিশে বলা হয়, নোটিশ পাওয়ার ৭ কার্যদিবসের মধ্যে মাওলানা মনিরুজ্জামানকে সুস্পষ্ট বিবৃতি দিয়ে তাঁর উল্লেখিত মন্তব্যগুলো প্রত্যাহার করতে হবে এবং নিঃশর্ত ক্ষমা চাইতে হবে। ভবিষ্যতে ধর্ম অবমাননামূলক মন্তব্য আর করবেন না—এমন প্রতিশ্রুতি দিতেও মাওলানা মনিরুজ্জামানকে আহবান জানানো হয়েছে। অন্যথায় নোটিশদাতা আইনের আশ্রয় নেবেন বলে নোটিশে বলা হয়েছে।

Post a Comment

[facebook][blogger]

MKRdezign

Contact Form

Name

Email *

Message *

Powered by Blogger.
Javascript DisablePlease Enable Javascript To See All Widget