গত ১৯ অক্টোবর, ২০১৮ তারিখে প্রদশর্নের মুক্তি পাওয়া ১০৩ মিনিট দৈর্ঘ্য জাজ মাল্টিমিডিয়া পরিবেশনায় “দেবী” সিনেমাটি সম্মানিত দ্বীন ইসলাম ও মুসলমানগণকে হেয় এবং মাদক গ্রহণকে উৎসাহিত করার অভিযোগে নির্মাতাসহ তিন জনকে আইনি নোটিশ প্রদান করেন দৈনিক আল ইহসান ও মাসিক আল বাইয়্যিনাত পত্রিকার সম্পাদক আল্লামা মুহম্মদ মাহবুব আলম আরিফ। তার পক্ষে বাংলাদেশ সুপ্রীম কোর্টের এডভোকেট মুহম্মদ হাসান শহীদ কামরুজ্জামান আজ রেজিষ্ট্রী ডাকযোগে লিগ্যাল নোটিশটি পাঠান।
নোটিশে বলা হয়, ‘স্বাধীন বাংলাদেশ’কে পরোক্ষভাবে নারী নির্যাতনের সেইফ হ্যাভেন হিসেবে চিত্রিত করার অপচেষ্টা করা হয়েছে। দেশের সাহিত্যিক হুমায়ূন আহমেদের “দেবী” উপন্যাসের অংকিত একটি বিশেষ প্রেক্ষাপটকে সামনে নিয়ে আসা হয়েছে যা পরোক্ষভাবে অত্যন্ত উস্কানিমূলক, বিশেষত ধর্ষণের জায়গা হিসেবে হিন্দুদের আরাধনার স্থান মন্দিরকে উপস্থাপন করে সম্মানিত মুসলিম সমাজের প্রতি অযাচিত এবং উদ্ধত্যপূর্ণ অঙ্গুলিনির্দেশ করা হয়েছে। ব্যাপারটা এমন যে মুসলমানরাই যেন ধর্ষণের জন্য মন্দিরকেই বেছে নিয়ে থাকে। এটা অত্যন্ত কুরুচিপূর্ণ এবং অভব্যতার এক নিন্দনীয় নিদর্শন।
নোটিশে আরো বলা হয়, দেবী চলচ্চিত্রটিতে প্রচলিত ধুমপান ও তামাকজাত দ্রব্য ব্যবহার (নিয়ন্ত্রণ) আইন,২০০৫ এর লঙ্ঘন করে পরোক্ষ ও প্রত্যক্ষভাবে কোমলমতি শিশু-কিশোরদের সামনে ধূমপান প্রশংসনীয় বার্তা হিসেবে প্রতীকী প্রতিষ্ঠার অপচেষ্টা করা হয়েছে। ধূমপান ও তামাকজাত দ্রব্য ব্যবহার (নিয়ন্ত্রণ) আইন ২০০৫ এর ৫ (ঙ ) ধারায় বাংলাদেশের প্রস্তুতকৃত বা লভ্য ও প্রচারিত সিনেমা, নাটক এবং প্রামাণ্যচিত্রে ধূমপান ও তামাকজাত পণ্য ব্যবহারকে নিষিদ্ধ করা হয়েছে। সাথে সাথে ওই আইনে নির্দেশনা দেয়া হয়েছে যে, তামাক জাতীয় দ্রব্য ব্যবহার দৃশ্য প্রদর্শন করে পর্দার আকারের অন্তত এক পঞ্চমাংশ জুড়ে কাল জমিনের উপর সাদা অক্ষরে বাংলা ভাষায় “ ধূমপান তামাক সেবন মৃত্যু ঘটায়” শীর্ষক সতর্কবাণী প্রদর্শন করতে হবে। এখানে আরো প্রকাশ থাকে যে এখানে উক্ত বিধিমালার ৫(গ) অনুযায়ী প্রেক্ষাগৃহে সিনেমা প্রদর্শন হচ্ছে তামাকজাত দ্রব্য ব্যাবহারের দৃশ্য রয়েছে।
এরূপ সিনেমা আরম্ভ হবার পূর্বে, বিরতির পূর্বে ও বিরতির পরে এবং সিনেমা প্রদর্শনের শেষে অনূন্য কুড়ি সেকেন্ড সময় পর্যন্ত সম্পূর্ণ পর্দা জুড়ে “ধূমপান তামাক সেবন মৃত্যু ঘটায়” শীর্ষক সতর্কবাণী বাংলা ভাষায় প্রদর্শন করতে হবে যা প্রযোজক তথা অত্র নোটিশ গ্রহীতার কথিত ‘দেবী’ চলচ্চিত্রের কোথাও ওই আইনের বাস্তবায়ন হয়নি। বরং ওই আইন কে তুচ্ছ করে মন গড়া শিল্প সুষমার দোহাই দিয়ে ধূমপানের মত অপরাধকে উৎসাহিত করা হয়েছে। এবং ওই আইনে নির্দেশিত বিষয়ে বৃদ্ধাঙ্গুলি প্রদর্শনকে শাস্তিযোগ্য দণ্ডনীয় অপরাধ হিসেবে গণ্য করা হয়েছে। যা রাষ্ট্রের প্রতি প্রকাশ্য হুমকি বলে রাষ্ট্রদ্রোহিতার শামিল বিবেচনা করা যেতে পারে।
আগামী সাত কার্যদিবসের মধ্যে ক্ষমা প্রার্থনা করে ভুল স্বীকার না করলে আইন-আদালতের আশ্রয়ে গিয়ে নোটিশ দাতা
সম্মানিত মুসলমানদেরকে হেয় প্রতিপন্ন করার জন্য সুনির্দিষ্ট নিয়মমাফিক প্রতিকারে ব্যবস্থা গ্রহণ করতে বাধ্য হবেন।

Post a Comment